কয়েকটি কবিতা ।। তাপস চক্রবর্তী


 

ঘাসফুল

মেঠো পথের কার্নিশ ধরে
রোজ রোজ 
দু-একটা ঘাসফুল ফোটে।
পূর্ণিমায় ওদের ফোটার যন্ত্রণা দেখি
মৃত্যুও দেখি ফেরার পথে
আমিও রোজ রোজ ঘাসফুলের মাঝে
তোমার আমার
অন্ত্যমিল খুজি বেহুদা সংসারে।


অবসন্ন শ্মশান

শহরের ইচ্ছেরা আজকাল দরোজা বন্দি
দেখি জানালায় বসেছে কাক।
জুঁই কিম্বা গোলাপের খুশবু— ঈর্ষার নদী
অনেকটা জোঁক, যীশুর গেঁথে দেওয়া শরীর।

ট্রাম কার্ডে রকমারি ডটকম
পিঁপড়ের সারি— গিরিগিটী 
ফসিলের আকার যেন ওয়ার্কএনহায়ার।

কাঠগোলাপে মুগ্ধতায় আরেকবার 
এসো
সেই উনিশের শেষ পত্রালাপে
কী লিখেছিলাম?

দেখো— রথের ঘোড়াগুলোর টঙের চারপাশে
নির্ঘুম ধর্মান্তরিত ঘাসফড়িং
দেখো— চরিদিকে এখন বিষন্ন শ্মশান
বাবার রেখে যাওয়া আধ পোড়া কাঠ।


মৃত্যু

ধরো আমাদের কোনো মৃত্যু নেই।

এই উঠোনের মতো আমরাও মৃত্যুহীন
কিংবা 
ওই শ্মশানমুখী আগুন আর জল।

জানি পথও মৃত্যুহীন।

শুধু পাঠশালায় 
আধপোড়া সিগারেট ধরিয়ে নেয় 
বোধ ও বুদ্ধি।

তবুও কেউ নেই উলঙ্গ 
কেউ ছিলো না ক্ষুধাহীন
কিছুতেই কেউ নেই কখনও।


কসম

আকাশ ঝুলে আছে তোমার কসম শুনে
কসমে আমার বিশ্বাস জন্মে — তোমার মিনসে হতে...

আহ্ এমন কসম শুনিনি কখনো
তাই রুপোলি বৃষ্টি ছিনিয়ে আমিও কবিতা লিখি 
রোজ রোজ মনে মনে।

অথচ এখন আকাশ দেখি বিরহি শরত তুলোট মেঘে
উঠানে নামে কদম পোড়া অকাল শ্রাবণ
রাতে আকাশে ভাসে পোড়া চাঁদ — 
পোড়া মাটির বাসন-কোষন যেমন।

কসমের ঠোঁটে কৃষ্ণচূড়ায় লাগানো নিভে যেতে যেতে
পারতো আজ-কাল-পরশু ফিরে এসো 
এই কাঠকয়লায় পোড়া রুটির দিনে
সব অপ্রাপ্তি ঘুচুক আজ আমার মৃত্যুর ঋণে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ