আদিত্য আনামের কয়েকটি কবিতা




ইগোর সাথে বসে বিড়ি খেতে খেতে

একটা হৃদয়ে কতগুলি প্রলেপ থাকে? কিংবা কতগুলি দুঃখ পোড়ালে একটা হৃদয় গঠিত হয় তুমি কি জানো, আদিত্য? 
তোমার আদি পিতা এবং মাতাকে এইখানে শাস্তির জন্য পাঠানো হয়েছিল আর তোমার জন্ম হয়ে জেলখানায় 
তুমি কি সুখের প্রত্যাশা করো এই নর্দমায় ভাসতে ভাসতে? 
বরং আমাকে চাও, আমিই তোমার মৃত্যু এবং মুক্তি 
ধারণার বাইরে বেরিয়ে আসো প্রিয়তম—





ঘুমগত সুখ

জেগে থাকলে বয়স বাড়ে, দুঃখ বাড়ে; 
বাড়ে যাতনার ঢেউ।
তারচেয়ে— চলো আমরা ঘুমিয়ে পড়ি, ক্রিস্টাল!
'মহাকাল' এক নির্বোধ শিশুর নাম
যাকে মাতিয়ে রাখা হয়েছে খেলায়।
সে খেলুক; আমরা ঘুমাই
যেহেতু আমাদেরকে ঘুমাতে হয়।
কেননা ঘুম-ই একমাত্র মাধ্যম 
যেখানে আমরা মিলিত হই।





বুদ্ধের নীরবতা

এই শরীর একটি আশ্রম। এখানে রোজ ক্লান্তি আসে। ঘুম আসে।  রোগ আসে। শোক আসে। দুঃখ আসে। ব্যথা ও বেদনা আসে। প্রেমসহ আরও আশ্চর্য অতিথিরা আসে অবিশ্বাস্য অধিকার নিয়ে। তারা আমার ভিতরে আশ্রয় খোঁজে। অথচ আমি খুঁজি কেবল তোমাকে।
কারণ এই শরীর কেবল তোমার আসবাব হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে। তুমি কখন আসবে হে মাধব? মৃত্যু আসার পূর্বেই তুমি এসো।
আমি অপেক্ষার হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছি অন্ততকাল
বিরহ অধিক হলে সন্তানতূল্য মনে হয় একটি মহাকাল—





তোমার না-থাকাজুড়ে কোনো পরিত্রাণ নেই

একটি অহেতুক দুপুর 
পাখিরা পলাতক
প্রেম আর পেরেশান 
উড়ে যাচ্ছে মাথার উপড় দিয়ে...
থোকা থোকা ফুলের লাশ আর
ফুটপাতজুড়ে ঘুমিয়ে ঘ্রাণ তার
ডিঙিয়ে 
ডিঙিয়ে 
আমি
তোমার কোলাহলপূর্ণ নরকে
বুকে নির্জনতা নিয়ে হাঁটছি।
মানুষেরা কই গেছে? হয়েছে কি উধাও? 
না, এমনিই আরকি!
তাদের কোনো গন্ধ পাচ্ছি না কোথাও!





আত্মহত্যা বিষয়ক অতিমানবীয় প্যাঁচাল


আত্মহত্যা বিষয়ক জমিনী কিতাবগুলো পড়ে যা পেলাম-তা হলো জীবন একটা কদবেল গাছ।

আর বেলতলায় বোকারা একবারই যায় ।

চালাকরা বহুবার গিয়ে বহু বেল পেয়েছিলো।

জগতের বাজারে তারা সেই বেল বেচে হয়েছিলো ধনকুবের।

যেহেতু জীবন আপনার পৈত্রিক সম্পত্তি, সেহেতু আপনি চাইলে যেকোনোভাবে মরতে পারেন।

অধিক আনন্দ কিংবা ভূয়িষ্ঠ বিষাদে এখন মরে যাওয়াটা অতিউত্তম মানবিক সিদ্ধান্ত।
আর ইতিহাস খুঁড়লে যে কয়টি হাড্ডি পাওয়া যাবে, তাদের মধ্যে সে হবে সবচেয়ে সাহসী নাম।
তাই, নিঃসঙ্গ আত্মহত্যার চেয়ে আসুন আমরা বরং গড়ে তুলি মরণ বিষয়ক যৌথ খামার।











 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ