নম্ফোদ্র দিলাওয়ারের কয়েকটি কবিতা

 

অন্ধ নজরে কীরুপ সুস্পষ্ট বর্তিক



কেবলই পরিধেয় তলে কমে যায় স্তনের  আয়ু কেবলই পরিধেয় তলে কমে যায় চিহ্নের আয়ু

   শব্দ আর স্পর্শ নিয়ে বেঁচে আছি

শব্দ আর স্পর্শ নিয়ে বেঁচে আছি

কোনো তাড়া নেই 

আর দেহজের কোনো তাড়া নেই

   শব্দ আর স্পর্শ নিয়ে বেঁচে আছি

কেবলই পরিধেয় তলে কমে যায় চিহ্নের আয়ু 



মাছে ভাতে বাঙালি 


আমি ভাত খাই জেগে ঘুমিয়ে হেসে কেঁদে কেঁদে

আমি ভাত খাই প্রতিদিন পাঁচবার 

আমি ভাত খাই যেমন খেয়েছি মনে হলেই

আম্মাকে 


আমি মাছ খাই উঠতে হাঁটতে বাহিরে যেতে যেতে

আমি মাছ খাই প্রতিদিন দুইবার তারও বেশি একবার 

আমি মাছ খাই যেমন খেয়েছি মনে হলেই জিগা  বৃক্ষের মতো আব্বাকে 



*



বেফাঁস 


বিপন্ন আমার হাত। উজ্জ্বল আমার মুখ। আর শিশ্নে তোমার হিতাহিতজ্ঞান যেন চোয়ালে হাতের ঠেস বিপন্ন অবয়বে— জানি, রাত একটা ছাপ্পান্ন। জীবন আমার ছোটো ছেলে। আমি নগ্ন, বিবস্ত্র। আমার মাথা প্রস্থপ্রস্থি ঢেউ হিলোলের পেন্সিলের আঁচড়। ডান হতে বা' দিকে ভেসে যাচ্ছে কাগজের নৌকা। বুকে বসা জীবিত একটি মাছি— আর আমি দেখছি তোমার নাভিকমল বরাবর প্রোজ্জ্বল জোছনার পসরা। 


আমি এমনভাবে ভেঙে শুয়ে রয়েছি। আদর করছ উন্মাদনায় যেন তরুণ কবির ইলাস্ট্রেশন। 


বন্ধু, আমার কাঁধে তোমার এলোমেলো ঝিম মূর্দা রেখে ঘুমাও। এখানে পাবে– প্রত্যুষের তৃণে কম্পিত শিশির—





সিঁদুর পরা সিঁথি, সিথানে নদী 


না– আর কোনো দিন ফিরছি না। প্রেমের সাথে মিলে না। খণ্ড হয়ে যাচ্ছে ঘ্রাণ– ছিঁড়ে যাচ্ছে হাসনাহেনার স্বভাব। অনেক কিছু হতে পারত। পারত ঘুম থেকে জেগে বস্তু হয়ে যেতে। ঠোঙা হয়ে গলিতে গলিতে উড়ে যেতে কিন্তু কোনো কিছু না হয়ে, ঘুম থেকে জেগে আগের লাহান মানুষ রয়ে গেল— 


ভাবা যেতে পারে মাছ ও মাছি পাশাপাশি রান্না হয়ে যাচ্ছে। বলছ, আকাশ কখনো পুরনো হয় না বলে একটা কথা আছে। আমরা তো আকাশের দিকে চেয়ে হাঁটি না যে আকাশ বিরক্ত ও পুরান হয়ে যাবে বরং মাঝেমধ্যে দেখি। মাঝেমধ্যে দেখা জিনিসে আলাদা আকর্ষণ থাকে। যেমন খণ্ডকালীন প্রেমকে দিই ‘অমরত্ব’। বরং ভাব, মাছ ও মাছি পাশাপাশি রান্না হয়ে যাচ্ছে। 


বাথরুম থেকে দরোজা খুলে বসলে রুমের ছোটো ফ্যানটা ক্লিয়ার দেখা যায়। কমোডে বসে চোখ ওইদিকে যেতেই মনে হলো এখন বাতাসের বদলে রক্ত ঝরবে, তখন এমন মনে হইছিল রুম থেকে কেচিনের দিকে তাকিয়ে এখন ট্যাপ থেকে রক্ত ঝরবে এখন আবার মনে হচ্ছে বাথরুমের ছোটো আলো আসা পথের গ্রিল থেকে হাত বাড়িয়ে আমার কণ্ঠ টেনে নিবে ফাঁস দেয়ার জন্য। 


এই আত্মহত্যার গেইমটা মাস দুই যাবত পীড়া দিচ্ছে যদিও শেষ পরিণতি আমার দেখা হবে না তবু শান্তি পাব মানে নিজেকে বোঝাই। সেই ভাবনা থেকে প্লাজো বেঁধে ঝুলে পড়ি! সংসারের দাগা খেয়ে– না, লাইনটা বাদ দিয়ে জীবনের দাগা খেয়ে জীবন থেকে তাড়িত— তাড়িত হয়ে আত্মবিধ্বস্তের মতো আত্ম-বিয়োগে মরিয়া গলায় পেঁচিয়ে নেয় প্লাজো৷ প্লাজো লিখছি! থাক, লিখছি লিখছি-ই। প্লাজোর রঙ হলুদ ও আ-ধোয়া ছিল। 


নিজেকে আম্মা লাগছে— নিজেকে-ই আব্বা— নিজে-ই যেন সন্তান; নিজেকেই মনে হচ্ছে পড়শি সমবয়সি। খুব টাফ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

সমস্ত বেদনা চূর্ণ হয়ে যাচ্ছে আমি আব্বার কাছে গেলাম 

সমস্ত বেদনা চূর্ণ হয়ে যাচ্ছে আমি আম্মার কাছে গেলাম

সমস্ত বেদনা চূর্ণ হয়ে যাচ্ছে আমি সন্তানের কাছে গেলাম

সমস্যা বেদনা চূর্ণ হয়ে যাচ্ছে দেখি, একি— আমি আমার কাছে-ই এলাম। 


অনেক কারণ থাকতে পারে মরে যাওয়ার  ইমপটেন্ট মরে যাচ্ছি। সহজ ও সাবলীল ‘মরে যাচ্ছি’।




ভ বিষ্ণু না এই কবিতার নাম বুদ্ধিজীবী 



একদম শীতে কম্বল মুড়ে আমার কোঠায় শুয়ে থাকব─

জরুরি শব্দ কবিতা গান প্রতিকৃতি অলংকরণ তেলাওয়াত─

আর কি কি যেন── কেউ ডাকবে না, কেউ হাসবে না 

রান্নার পাত্রে তিন বেলা রান্না করা রইল

বিছানা ঝাড়ু দেয়া, মশারি টানানো, লাইট অফ করা এসব আমিই নিলাম

একবার ক্ষমতা আসলে করে নেব

নতুবা যুদ্ধ হয়ে যাক দেশে মরে গেলাম আর বেঁচে গেলে তো হলোই──


 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ