১ ডিসেম্বর ২০২৪
বন্ধু, হৃদয়ের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত লোনলিনেসের প্রোপাগান্ডা আর ভাল্লাগে না,
বহুদিন একটি নির্মোহ নিঃসঙ্গ পর্দা ধরে ঝুলে আছি আমরা—কুসুমিত পোতাশ্রয়ে
এসো সচেতনে এগোই, হাঁসের পালকে জড়ো করি চিত্রার্পিত মাছরাঙার আশিস।
অমনোযোগী ভুজঙ্গ অপরাহ্নে,বকেয়া সমস্ত সঙ্গম এঁকে ফেলি ভ্যানগগের
সেরুলিয়ান পেইন্টিংয়ে। স্তিমিত রাত্রির করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে ডানা ঝাপ্টানো
এরোপ্লেন, প্রজাতির মিনিবাস, দীর্ঘ রাস্তার সিঁথি; চলো বন্ধু, নিসঃঙ্গতার গর্ভ হতে
বেরিয়ে শীতের ইথারে ফুটিয়ে তুলি বায়োস্কোপের শৈশব, পিতামহের অস্পষ্ট মুখাবয়ব।
দাবার বোর্ডে ঋণী হয়ে থাকা ঘোড়ার কাছে স্বীকার করি অভিজাত কাতরোক্তি।
বন্ধু, বন্ধু, তরমুজের মতো লাল হৃদয়ে এমন লোনলিনেসের প্রোপাগান্ডা আর ভাল্লাগে না,
চলো দীঘির আধখন্ড চাঁদের গাঁয়ে হেঁটে আসি
একটু
খালি
পায়ে।
১০ নভেম্বর ২০২৪
তুমি কি নেবে তাঁকে যার সাথে নিশ্চেতন বিকেলগুলো ধীরে ধীরে অগ্রসর
হয়,
শোকাভিভূত শেফালির দিকে। গ্রীষ্মকালীন ছুটিসমূহ, লাঞ্চনার হাত
বাড়িয়ে
দেয়,খাঁ খাঁ দক্ষিণ মাঠের অবগাঢ় ভ্রমণে। নেবে কি তাঁকে নির্বিকার
ধূসরাভ
আহ্লাদপ্রথায়? ইউক্যালিপটাস ছুঁয়েছে মেঘেদের কার্নিশ!
জুবুথুবু হৃদয়ে স্বতঃস্ফূর্ত তামসী, নিথর হাওয়ায়,প্রচারিত হয়েছে
অপরাহ্নের নীলবর্ণ ঘুম।
সবুজ বৃক্ষ মাখানো অবয়বে, সমপাপরির মতো চুপসে গেল যার সমস্ত
ছেলেবেলা,
উদ্দাম হাসি,আঙ্গুল দিয়ে ছুঁয়ে দেখা মায়ের স্বপ্ন, স্রেফ—ফ্রন্টেজ রোডে রুক্ষ কুকুরটার,
ছানিভর্তি চক্ষুদ্বয়ে যার নিস্ফল পায়চারী— তুমি নেবে কি তাকে?নেবে?
উত্তরের ছাতিমতলায়—পাহাড়ি শৌখিন মহড়ায়—
দু'একটা নরম রাত্রির সরোবরে।
৮ অক্টোবর ২০২৪
প্রতি শীতের
শনিবার আমি মরে যাই। মাথার ভেতর টনটন করে অঢেল জলজ বেদনা,
কুয়াশাচ্ছন্ন
জানালার পাশে উলঙ্গ হয়ে থাকে সমবেত নিরবতার ব্রত, শুকনো উদাসীন
পুকুর ঘাটে
বিমোহিত হয় আর্তনাদহীন বুকের ব্যথার উপদ্রব।
প্রতি শীতের
শনিবার তবুও যাই নিদ্রার নিকটে ভারি ভারি হতাশার পর্দা টেনে
কেমন আলস্যে
শুয়ে থাকি কাম্পালা শহরের দূষিত ভৎসনার ভ্যাতর।
প্রতি শীতের
শনিবার থুৎনি ধরে নেমে আসে প্রাগৈতিহাসিক বিমর্ষ ঝর্ণা; দূরে—অলৌকিক
সারি সারি
ডিঙি নৌকা ভেসে যাচ্ছে সূর্যের পোতাশ্রয়ে, অভিবাসী মেঘেদের অবয়বে
ফুটছে চন্দ্রমল্লিকা, খেজুরডালে ঝুলে আছে মায়ের হৃদয়।
তবুও তো প্রতি শীতের শনিবার অপরাহ্নে
আমি চেয়ে থাকি
দীর্ঘ এক খাঁ খাঁ শূন্য পথে ,মরে যাই—তোমার চলে যাওয়া পত্রের নিবেদনে।
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪
যে সমবেত শোক ছুঁয়ে আমি শুয়ে আছি
দৃশ্যত বেদনার হিমে—
সে সমস্ত শোক হতে অনাবৃত সন্ধ্যা চলে
যায় কতিপয় ছাতিম আয়ুর
ভ্রমণে। নিকটবর্তী ঝাউবনের গন্তব্যে
জেনেছি হতাশাবোধে আমি
বিস্তৃত একটি জরাজীর্ণ শূন্যগ্রাম—
যেখানে মৃত্তিকায় জন্মায় হাহুতাশ,
বাতাসের আশ্রয়ী স্রোতে দোলে ঘাসেদের
জীবনী। জেনেছি—
আমার একাকিত্বের মার্বেল নিয়ে ভেলকি
করে ধূসর নিঃসঙ্গতা,
সম্মিলিত যে শোকাভিভূত দুঃখ ছুঁয়ে
আমি বসে আছি অপসৃত রোদনের গ্রাফে,
সে সমুদয় দুঃখ আহত মাছের ফুলকায় কান
পেতে শোনে বেঁচে থাকার
ফ্যান্টাসি। মনোহারিত্ব তরুতলে প্রার্থিত
সরস মোহছায়া প্রবিষ্ট হয়ে যাচ্ছে
মৃত পাখিদের শেষকৃত্যে। শৈশবের ভাঙা
সাইকেল হতে অপনীত হয়ে আসছে
পিপাসার্ত অভিলাষ, কদর্য ঘোর। ভরাশ্রু
অনিদ্রার বিধিলিপি নিয়ে উপনীত হয়
অপয়া ললাট। রাত্রির যেসব নীলাভবর্ণ
বেদনার প্রহারে অসহায়ত্বের চাদর ধরে
দাঁড়িয়ে আছে সময় —সেসব বেদনাদের
সন্নিহিতে আমি সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছি স্তিমিত
আকাশময় বায়ুর অতলে— সবিনয়ে।
৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
তবুও
নস্যাৎ হয়ে যায় বিবিধ স্বপ্নাতুর পায়চারি। নিশ্চেতন রর্সাত বয়স নিষ্ফলা পথে
উঁকি
দেয় চুপিচুপি, সুনিবিড় নানান রঙের কান্নার শুশ্রূষায় বেড়ে উঠছে শীতকালীন ছুটির
আয়ুষ্কাল।
হৃদয় হতে হৃদয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে মায়ের আঁচলের সুতো, তবুও হায় বেদনার
বৃক্ষ
তলে শুয়ে জীবনানন্দের ট্রাম অনাবিল শূন্যতা নিয়ে ছুটে যায় উলঙ্গ শোকসভায়।
যাবতকালে
সুরক্ষিত ক্ষুধার প্রদশনী দেখি পর্দার আড়ালে, অন্ধকারের গহ্বরে ভগ্নপ্রায়
বুক
রিক্ততা নিয়ে দাঁড়িয়ে রয় কোনো নীল পাহাড়ের মতোন। হাহাকারের প্রদেশে বহুকাল
ধরে
গুচ্ছগুচ্ছ ঋণের চাষ প্রাচীর তুলছে চোখের মেরুপথে। আমি জানি দুঃখ বলতেই জীবন—
জীবন
বলতেই উঠোনের অবহেলিত কুয়াশাচ্ছন্ন রোদ। যার দিকে তাকিয়ে হতাশার সহিত
আলোচনার
পর ডুবুরির মতোন একটান শ্বাস টেনে নেয় স্পর্ধিত নিঃসঙ্গতা।
0 মন্তব্যসমূহ